ফ্ল্যাট স্ল্যাবের বিল্ডিংয়ের ঝুঁকি

ভূমিকম্পের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বীম বাদ দিয়ে , পর্যাপ্ত শিয়ার ওয়ালও ব্যবহার না করে ফ্ল্যাট স্ল্যাবের বিল্ডিং ডিজাইন করা খুবই বিপদজনক | ১৯৮৫ সালে মেক্সিকোতে ভয়াবহতম ৮.১ মাত্রার ভূমিকম্পে এই ধরনের প্রচুর বিল্ডিং কলাপ্স করে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়। তারপর মেক্সিকো কোড কমিটি, ফ্ল্যাট স্ল্যাব ব্যান করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু তাতে বাধা দেয় অনেক বিল্ডিং নির্মাতা ও নির্মাণ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পেশাজীবীরা। এর ৩২ বছর পর ২০১৭ সালে আবার ৭.১ মাত্রার প্রবল ভূমিকম্প আঘাত হানে। একই ঘটনা ঘটে – ফ্ল্যাট স্লাবে নির্মিত বেশিরভাগ বিল্ডিং ভেংগে পড়ে আবারো প্রচুর মানুষ মারা যায়। বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোডে, অধিক ভূমিকম্পপ্রবন এলাকায় যেখানে স্পেশাল মোমেন্ট ফ্রেম ব্যবহার করা হয়, সেখানে ফ্ল্যাট স্ল্যাবকে ল্যাটারাল লোড রেসিস্টিং সিস্টেমের অংশ হিসেবে ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

আমাদের দেশেও পর্যাপ্ত সাইসমিক ডিটেইলিং ছাড়া এইধরনের বিল্ডিং অহরহ হচ্ছে। বিশেষ করে যেসব বিল্ডিং কোন রেজিস্টার্ড স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার এর ডিজাইন ছাড়াই নির্মিত হচ্ছে। অনেক বিল্ডিং মালিক হয়ত মিস্ত্রী বা অন্য কারো প্ররোচনায় ডিজাইনের এর ফী বাঁচাতে গিয়ে মিস্ত্রী দিয়েই বিল্ডিং করে ফেলছেন| মিস্ত্রী রা তাদের কনভিন্স করে – “স্যার ফ্লাট স্লাব কইরা দেই, বীম নাই , সুন্দর লাগবো রুমে “।

যথাযত আর্কিটেকচারাল, স্ট্রাকচারাল , ইলেক্ট্রোমেকানিক্যাল ও প্লাম্বিং ডিজাইন ছাড়া মিস্ত্রী দিয়ে বিল্ডিং বানালে দু’টো ঘটনা ঘটতে পারে। মিস্ত্রী তার অজ্ঞতার কারণে যেখানে যতটুকু প্রয়োজন তার তুলনায় বেশী রড বা অন্য ম্যাটেরিয়াল দিতে পারে। যা খরচ বাড়াবে কিংবা বিল্ডিংয়ের ডাক্টিলিটি কমবে। অন্যদিকে কোথাও ম্যাটেরিয়াল কম দিলে তা কলাস্পের ঝুঁকি থাকবে।

এভাবে নিজেদের সঞ্চিত সব অর্থ খরচ করে প্রাকৃতিক দূর্যোগে ভালনারেবল বিল্ডিং নির্মাণ করবেন না।



Leave a Reply